1. admin@sahittyadiganta.com : সাহিত্য দিগন্ত ডেস্ক : সাহিত্য দিগন্ত ডেস্ক
  2. editor.sahittodigonto@gmail.com : সম্পাদক : জায়েদ হোসাইন লাকী : সম্পাদক : জায়েদ হোসাইন লাকী
রোদেলা নীলা এর ৫টি কবিতা | সাহিত্য দিগন্ত পত্রিকা
বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০১:৩২ অপরাহ্ন

রোদেলা নীলা এর ৫টি কবিতা

রিপোটারের নাম
  • প্রকাশের সময় : রবিবার, ১৬ জুলাই, ২০২৩
  • ১৬৮ বার এই সংবাদটি পড়া হয়েছে
রোদেলা নীলা

ক্ষমা করো কোভিড-১৯

কোভিড ১৯ বিদেয় নিলে আমি গাছেদের কাছে যাব;
দু’হাত জোর করে ক্ষমা চাইবো,
আর একটি কুড়ালের আঘাত তাদের শরীর
স্পর্শ করবে না;
প্রতিজ্ঞা করছি।

কোভিড ১৯ চলে গেলে আমি কারখানার কালো ধোঁয়া
উড়তে দেব না আকাশে;
ইট ভাটার যতো চিমনি আছে সবগুলোর মুখ
বন্ধ করে দেব;
কথা দিচ্ছি আকাশ;
আমি তোমাকে আর পুড়তে দেব না।

কোভিড ১৯ থেমে গেলে ছোট বড়  সব  রাস্তার
যানবাহন কমিয়ে দেব;
মেট্রো কিংবা উড়াল সেতু সব গুড়িয়ে দেব মুহূর্তে,
হেঁটে হেঁটে পাড়ি দেব অনেকটা পথ;
এখন যেমন হাঁটি ঢাকা থেকে চট্রগ্রাম।

কোভিড ১৯ সেড়ে যাবে না কোন দিন পৃথিবী থেকে;
আমরা সেড়ে উঠবো,
আমরা মানুষ হবো,
অবাধে হত্যা করবোনা অরণ্যের যতো জীবন,
সমুদ্রে পাহাড়ে আবর্জনার স্তূপ জমাবোনা য়ার।

কথা দিচ্ছি-
আমরা মানুষ হবোই

২)
এক যুগ ধরে আমি তোমাকে দেখি না

এক যুগ হয়ে গেল তোমাকে দেখি না;
তোমাকে না দেখতে দেখতে তোমার মুখ অচেনা হয়ে যাবে,
তোমার কন্ঠ না শুনতে শুনতে তোমার স্বর অচেনা হয়ে যাবে,
সত্যিই কি তুমি আমার সবচেয়ে অচেনা মানুষটি
হতে যাচ্ছো?

সত্যিই কি আমাদের সময়গুলো তুমি  ভুলে যাচ্ছো?
তুমিইতো বলেছিলে ব্ল্যাক স্ক্রিনে তুমি আমার শরীরের তরতাজা ঘ্রাণ পাও ;
তুমিই শিখিয়েছিলে –
এক সহস্র কিলোমিটার দূরে থেকেও শুধুমাত্র
চোখ বুজলেই কতোটা সহজে কাছে আসা যায়।
তুমি কি আমাকে ভুলে থাকা শেখাচ্ছো?

তোমার জন্য অপেক্ষা করে সাইলেন্ট বিহীন স্যামস্যাং;
তোমাকে একবার দেখবে বলে সাইনইন হয়ে থাকে ফেসবুক আর ভাইবার।
আরো কোন এপ্লিকেশন জানা থাকলে বলে দাও
যার মধ্য দিয়ে আমি কেবল তোমাকেই দেখতে পাবো,
আরো কোন ভয়েজ মেইল থাকলে শিখিয়ে দাও;
জানতে পারবে প্রতিটা মুহূর্তে কতোটা শুকোয় কন্ঠ কেবল
তোমার সাথে মুখোর হবে বলে।

এত্তো মানুষ চারদিকে;
তবু কথা বলতে না পারার তৃষ্ণা আমি মেটাতে পারছি না।
আমি আরো কিছুটা জীবন তোমার পাশে বসে
কাটিয়ে দিতে চাই,
তোমার ব্যস্ত ড্রাইভিং,
হারানো গানের সুরে একলা আমিই না হয় ভেসে যাব।
তাই চেয়ে দেখো-
একটা যুগ ধরে আমি তোমাকে দেখি না।

৩)
এক টুকরো আহবান 

অশুদ্ধতার ভরা স্রোতে প্লাবন
ছড়িয়ে তোমরা চলে যাও
তোমরা বিগত হতে থাকো,
এই তুমি আমি মার্কা মিথ্যে প্রহোসন একদিন থামবে জানি।

তবু একদিন
খুব বেশি ঝড় হতে ইচ্ছে করে আবার
প্রলয়ঙ্করী প্রেতাত্মার মতো মোটকে দিতে ইচ্ছে করে কুকুরের হাড় গোড়।
ওরাও কি মানুষ?

দু’চোখ বেয়ে কেবল লালসার লালা খেলা করে
বার্ধক্যের মলাট পড়ানো যৌবনে!
হাসি পায় , ভীষন হাসি পায়
পাট করা সিঁথিতে সাদা চুলের উঁকি ঝুঁকি খেলা।

হয়তো সময় মেনে নিয়েছে আধুনিকতার ডাক
কিন্তু তারপরো কিছু কথা থেকে যায়
থেকে যায় নৈতিকতার সত্য আহংকার যার গলায় মালা পরালে কেবল নিজে নয়,
চারপাশটাও বড্ড বেশি আলোময় হয়ে ওঠে।

এই সোনা রোদ ছড়ানো মুক্ত উঠোনে একবার পা ফেলে দেখো-
একটি বার চোখ মেলে তাকাও দিগন্তের পাড় ঘেঁষা নীলান্তে,
ওখানে ভালোবাসারা সারাদিন লুটোপুটি খায়,
বিশ্বাসে মেঘকে করে আলিঙ্গন ।

তুমি বা তোমরা,
তা যেই হও না কেন
ক্ষমতার শক্ত শৃংখল থেকে বেরিয়ে
একবার সবুজ ঘাসে পা ছুঁয়ে দেখো-
কী অপরুপ স্নিগ্ধতার ডালা সাজিয়ে রেখেছেন বিধাতা।

ঠান্ডা বাক্সের হীম ঘরে আর আটকে রেখোনা নিজেকে,
গাদা গাদা ফাইলের মাঝে মুখ ডুবিয়ে খুঁজতে চেও না চেনা নোটের হাসি;
শেষবারের মতোন শুধু একবার হায়েনার মুখোশটা খুলে ফেলে দেখো-
তোমাদের কপোল জুড়ে নেমে আসবে অবাক মুগ্ধতা।

৪)
অরণ্য, তুমি মানুষ হয়েই রইলে 

অরণ্য,
তুমি নীল নদ হলেনা বলে
তুমুল বৃষ্টিতে ভেজা হলো না আমার;
তুমি কী জানো?
ঢাকার আকাশ ফুঁড়ে নেমেছে প্লাবন জলধারা।

অরণ্য
তুমি মুগ্ধ আকাশ হলে না বলে
মেঘের দু’পায়ে শেকল খোলা হলো না আজ,
নিভৃতে রয়ে গেল অন্ধকারে;
ওপ্রান্তে ছুটে বেড়াবার সুযোগে এলো বাঁধা।

অরণ্য
তুমি কেবলি মানুষ হয়ে রইলে
রক্ত মাংসের কঠিন মানুষ,
নিত্য কাজের চাপে তোমার সময় ভীষণ মাপা।

স্রোতহীন শূন্য বালুকারাশিতে তুমি মগ্ন পথিক,
আমি স্বপ্নে থাকি  গাংচিল হয়ে;
সীমান্ত ছাড়িয়ে উড়ে যাই অচেনা রাজ্যে৷

সেখানে হয়তো মানুষ বাস করে না,
সেখানে অরণ্যের অফুরন্ত সময়;
সেখানে আমি আর শুধুই অরণ্য।

জানি, জীবন মানে কবিতা নয়৷
শৈল্পিক শব্দ খেলায় যাপিত সময় সাজানো যায় না,
তাইতো অরণ্য কোন দিন আমার প্রেমিক হয়ে
এই বাংলার বুকে  ফিরে আসবে না।

৫)
বিন্দাস ফেসবুকার

ওরা মরলে মরুক;
আমার এতে কী এসে যায়,
টেবিল ভর্তি নানান পদের খাবার সাজাই
দফায় দফায় ছবি দিয়ে জাহির করি,
আমার হাতের রান্না অতি জাদুর খেলা;
লোকে দেখে যতো খুশি ঢেকুর তুলুক,
আমার তাতে কী এসে যায়
লোকের যদি মন খারাপ হয়, করুক।

খাবো দাবো ফূর্তি করে
এফবি ভরে ছবি দেব;
মহামারী’র তান্ডবে আর আগুন পুড়ে
যতোই মানুষ মরুক।
যারটা গেছে বুঝুগগে সে
আমার প্রোফাইল ভরা থাকবে
আনন্দময় মহোৎসবে;
পাশের বাসায় যতোই কান্না চলুক।

দেশের ভেতর যা হচ্ছে তা বাড়ুক
আমি কী ছাই দেশের নাকি;
আমার বাড়ি মংগল গ্রহে
কার মেয়েকে খুন করে যায়
যার মনে চায় যতোই মিছিল করুক,
আমার  দরজা খুলছি না ভাই
যার মুখে যা ইচ্ছে মতো বলুক।

Facebook Comments Box
Website | + posts

এই সংবাদটি শেয়ার করুনঃ

এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

মিকি মিডিয়া লিমিটেডের একটি প্রতিষ্ঠান। © ২০২৪ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
প্রযুক্তি সহায়তায় Rudra Amin