“মা” তুমি আমাকে ক্ষমা করো, আমিও পশু তুমিও পশু। প্রাপ্ত বয়স হলে পশু হয়ে যাবো দু’জনা, পৃথিবীকে সাজাবো যৌনসুখের বাসরশালায়। বলো, আর কি কি অধিকার পেলে অগ্নিদগ্ধ হয়ে আমাকে মৃত্যু বরণ করতে হবে না। তুমি জানোনা মা, দাহতা কতোটা যন্ত্রণার। তোমার একটু অসামাজিক কর্ম দেখেই ফেলেছি নাহয়, এজন্য আমাকে পুড়িয়ে মারবে?
আমাকে এবং আমাদের ছেড়ে তুমি দূরেও চলে যেতে পারতে, অন্তত পৃথিবীতে আর ক’টাদিন বেঁচে যেতে পারতাম, তুমিও তোমার ইচ্ছে পূর্ণ ক’রে সাজাতে পারতে যৌনতা । মা, তোমাকে অপরাধী ভাবতে খুব খুব কষ্ট লাগে, আমাকে মেরে যদি তুমি বেঁচে থাকতে, তবে আমার এ মৃত্যুতে কোনো আফসোস থাকতো না, আমি নিজেকে ধন্য মনে করতাম। যিনি আমাকে এনেছেন তিনিই আমাকে মেরেছেন। কিন্তু আজ পৃথিবীতে “মা” শব্দটি কলঙ্কিত ভাবতে পারছি না, দগ্ধ হয়ে মৃত্যুর যন্ত্রণার চেয়ে এ অপবাদ যে আরও বেশি যন্ত্রণার…মা।
মা, পৃথিবীতে অনেক শুনেছি। কথায় কথায় তোমরা দাবি করো নারী মানেই “মা”, আর পুরুষ মানেই ধর্ষক। আচ্ছা মা, একজন মা তার সন্তানের জন্য পৃথিবীতে কতোটা নিরাপদ তা সৃষ্টিকর্তার পর পরই তুমি জানো। এমনটা শুধু আমি নই পৃথিবীর তাবত জীব বেশ ভালো ক’রেই জানে। কিন্তু বর্তমানে? কোনো ভরসা আছে কি মা?
এখানে তোমার যৌনতা এতোটাই প্রিয় এবং উপভোগ্য যে তোমার সন্তান অগ্নিদগ্ধ হয়ে ছটফট ক’রে চোখের সামনে মৃত্যু বরণ করছে সেটাকে সামান্য মনে করছো!, একবার ভেবে দেখেছো কি? নারী মানেই মা, নারী মানেই নিরাপদ পৃথিবী, আর আজ আমার গায়ে অগ্নিসংযোগকারীও একজন মা!
মা, পৃথিবীর আয়ু কতোদিনের, আর কতোদিনই-বা-আমি, তুমি, তোমরা বেঁচে থাকবো? এইতো আমি, তোমার আগেই পৃথিবীকে বিদায় জানালাম, একদিন তুমি ও তোমরাও জানাবে। এসো ক্ষণিকের সুখ ভুলে পৃথিবীর পর আরেক পৃথিবী সাজাই।
আমি দৃষ্টি দিলেই তুমি বলো দৃষ্টিভঙ্গি বদলে দাও, আর
আমি ছুয়ে দিলেই ব্যভিচারী, তুমি কলঙ্গিত হয়ে যাও
কিন্তু উলঙ্গ হলে কোনো দোষ বা অপরাধী তুমি নও
যতো দোষ, যতো অপরাধী শুধু আমি ও মেঘ-বৃষ্টি, বাও!
মেয়ে তুমি সাবধান হয়ে যাও, যে পুরুষ তোমায় রাজপথে বেহায়াপনা করতে সমর্থন করছে, তুমি ভাবছো সেই একমাত্র উত্তম পুরুষ; তবেই তুমি ঠকেছো। খুঁজে দ্যাখো অন্ধগলির কামঝরানোর কামড়া কিংবা নামিদামী তুলতুলে বিছনার ঘর, দেখবে; গতকাল সে তোমাকে রাজপথে বেহায়াপনা করতে সমর্থন করেছে, তার নখের আচড়ে ক্ষত বিক্ষত তোমার মতো আরেকজন। যে বুক ভরা যন্ত্রণা নিয়ে প্রতিদিন নিয়ন আলোয় নিজেকে হারিয়ে ফ্যালে, হয়তো একদিন তুমিও নিয়ন আলো খুব ভালোবাসবে! সময় হারিয়ে একদিন তুমিও বুঝবে, তারচেয়ে ভালো ফিরে এসো, দেখবে; পৃথিবী কতো সুন্দর।
________________________________________
উত্তরা, ঢাকা-১২৩০, ১৮০৪২০১৮, সকাল: ১১:৩৫।
হে পুরুষ,
হুশ হারিয়ে বেহুশ হয়ে করছো তুমি একি?
নিজ আমানত দিচ্ছো তুলে অন্যের হাতে দেখি!
পণ্য দামে পণ্য করে তুলছো মানুষ হাটে
কেবা নারী কেবা সঙ্গী ভাবছো না শাস্ত্র ভুলে
অতঃপর,
দিন হারিয়ে দিনের খোঁজে করছো কতো কিযে?
ক্যানো বলো এই খোঁজাটা আগে খুঁজে দ্যাখোনি
এসো থাকতে সময় আমার করি, থাকবে ধরণী।
________________________________________
কসাইবাড়ি, উত্তরা -১২৩০, রাতঃ ১০:৩০
নিয়তির নিয়মে পাতা ঝরে পড়ে, বৃক্ষ বেঁচে থেকেও মৃতের অভিনয় ক’রে মানুষ গড়ার দায়ে। আর আজ আমি বুঝে গেছি আমার নৈতিক চরিত্র ঠিক নেই, তার সাথে সাথে এটাও বুঝলাম আমি মানুষ হয়ে উঠতে পারিনি মানুষ হওয়ার দায়ে কিংবা পুরুষ। সত্যি এটাই- আমি, তুমি, আমরা সবাই বছরের পর বছর ধর্ষণ ক’রে চলেছি, নিজের অজান্তেই হয়ে গেছি ধর্ষক!
হে পুরুষ, আমাকে তিরস্কার করার আগে তুমিও আমার মতো একবার চিন্তা ক’রে দ্যাখো, দেখবে তুমিও ঠিক তাই। আঁধার নেমে এলেই হয়ে উঠছো একজন পশু! মিত্রতার সনদে সই ক’রেও বৈধকে করছো অবৈধ।
হে নারী, এসব পড়ে হেসো না কিংবা বিদ্রুপ করো না, তুমিও তোমার স্বার্থের কারণে বিলীন করেছো সম্ভ্রম। যতোটা আমি দায়ী ততোটা তুমিও। আজ কথায় কথায় জাত তুলে যে ধিক্কার দাও সেটাও তোমারই দেয়া সম্মতির বাউরা সংশ্রব।
অতঃপর, নিয়মের খাতায় নিয়ম রেখে আমরা হয়ে উঠছি ব্যাভিচারী, আর তুমি হয়ে উঠছো একজন মাদার ক্লদ। এসো, রাষ্ট্রীয় এবং ধর্মীয় নীতিতে পূর্ণ করি মিত্রতার সনদে দেয়া সম্মিতর স্বাক্ষর। দেখবে একদিন পূর্ণ হবে ধর্ষক ও মাদার ক্লদ মুক্ত রাষ্ট্র।
কসাইবাড়ি, উত্তরা, ঢাকা-১২৩০, রাত: ৯:১৫, ২০৪২০১৮।